Tuesday, 31 March 2015

নামাযে কুরআন কি বুঝে তেলোয়াত করতে হবে?



মুসাদ্দাদ(রঃ)---আলী ইবনে আবী তালিব(রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ একদা জনৈক আনসার সাহাবী তাঁকে আব্দুর রহমান ইবনে আওফ(রাঃ) কে দাওয়াত দিয়ে শরাব পান করান আর ছিল শরাব হারাম হওয়ার আগের ঘটনা এরপর আলী(রাঃ) মাগরীবের সালাতে তাদের ইমামতি করেন এবং সুরা কাফিরুন পাঠ করেন, যাতে তিনি ভূল করে ফেলেন তখন আয়াত নাযিল হয়ঃতোমরা নেশাগ্রস্থ অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তী হবে না, যতক্ষন না তোমরা তা অনুধাবন করতে সক্ষম হও যে, তোমরা কি বলছ” (আবু দাউদ-৩৬৩০ ইঃফাঃ) 
অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ(রাঃ) ইমাম হয়েছিলেন এবং তিনি নিম্নরুপ পাঠ করেছিলেনঃ
 ِ   قُلْ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْكَٰفِرُونَ
|   أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ
|وَأَنتُمْ عَٰبِدُونَ مَآ أَعْبُدُ
|وَأَنَا۠ عَابِدٌۭ مَّا عَبَدتُّمْ
|لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِىَ دِينِ
(নিসা ৪৩ আয়াতের ব্যাখ্যা-তাফসীর ইবনে কাসীর)”
আল্লাহতায়ালা বলেনঃতোমরা নেশাগ্রস্থ অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তী হবে না, যতক্ষন না তোমরা তা অনুধাবন করতে সক্ষম হও যে, তোমরা কি বলছকিন্তু মহান আল্লাহসুবহানাহু তায়ালা কথা কেন বলেছিলেন? কারন সাহাবী(রাঃ) মাতাল ছিলেন,তিনি(রাঃ)ভুল তেলয়াত করছিলেন এবং অবস্থায় তিনি(রাঃ) বুঝতে পারছিলেন না, তিনি(রাঃ) কি পড়ছেন? ক্ষেত্রে কয়েকটি বর্ণনা এসেছে তন্মধ্যে উপরেরটি আমি উল্লেখ করলাম এখন দেখুন তো এখানে তিনি(রাঃ) কি ভুল করেছিলেন? ১ম আয়াত ঠিক আছে, ২য় আয়াতে তিনি পড়েছেনঃআমি ইবাদত করি, তোমরা যার ইবাদত করএই আয়াতের সঠিক রুপ ছিলঃ আমি ইবাদত করি না, তোমরা যার ইবাদত করশুধু মাত্র একটিনাএর পার্থক্যের জন্য পুরো বাক্যটি উল্টো অর্থ বহন করছে
এখন আমি যে উদ্দেশ্য লিখছি তার দিকে লক্ষ্য করা যাক আমাদের সমাজের প্রায় সব ইমামই(দু’,একজন অবশ্য ভাল আছেন,তবে এতবড় মুসলিম উম্মাহের মধ্যে এই নগন্য পরিমান কোন দৃষ্টান্ত হতে পারে না)সে যা তেলয়াত করছে তার অর্থ জানে না এখন ইমাম সাহেব,জানলে ওয়ালা লোক,তিনি সালাতের ইমামতি করছেন, কিরাতে সুরা ফাতেহার পর সুরা বাকারা থেকে কয়েকটি আয়াত তেলয়াত করলেন তার মধ্যে এই আয়াতটিও ছিলঃ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ كُلُوا۟ مِمَّا فِى ٱلْأَرْضِ حَلَٰلًۭا طَيِّبًۭا وَلَا تَتَّبِعُوا۟ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيْطَٰنِ ۚ إِنَّهُۥ لَكُمْ عَدُوٌّۭ مُّبِينٌ
হে মানুষ, পৃথিবীর হালাল পবিত্র বস্তু সামগ্রী খাও আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু
আর হুজুর সাহেব তেলয়াত করলেনঃ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ كُلُوا۟ مِمَّا فِى ٱلْأَرْضِ حَلَٰلًۭا طَيِّبًۭا وَتَتَّبِعُوا۟ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيْطَٰنِ ۚ إِنَّهُۥ لَكُمْ عَدُوٌّۭ مُّبِينٌ
যার অর্থ হচ্ছেঃহে মানুষ, পৃথিবীর হালাল পবিত্র বস্তু সামগ্রী খাও আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রুএখানেও একটিনাবাদ পড়ল, যার জন্য আয়াতাংশের একটি বাক্য বিপরীত অর্থ প্রকাশ করছে
হুজুর নিশ্চয়ই ইচ্ছা করে এমনটি করেন নি, কিন্তু তার ভুল হয়েছিল একই ভুলের জন্য, যেমন ভাবে সুরা নিসার-৪৩ নং আয়াতটি সাহাবী(রাঃ)দের জন্য প্রযোজ্য, তেমনি করে তা আমাদের হুজুরসহ সাধারন লোকের জন্যও প্রযোজ্য হবে কারন আমি যখন তেলয়াতে উল্টা কথা বলব,আমি তো বুঝতেছি না,আমার তো এটা মুখস্ত,এখান থেকে শুধু একটা শব্দ বাদ পড়েছে,কিন্তু এই একটি বাদ পড়ার কারনে বাক্যটাই যে উল্টো হয়ে গেল, এখন কি আল্লাহ আমাকে বলছেন না,হে আমার বান্দা তুমি কি বলছ? না বুঝে তুমি সালাতে তেলয়াত কর না  
এখন প্রশ্ন হচ্ছে সাহাবী(রাঃ) তো মদ্য পান করে মাতাল ছিল, তাই তাঁর(রাঃ) ভুল হয়েছে, কিন্তু হুজুর সাহেব তো মদ্য পান করেন নাই, তিনি তো মাতাল ছিলেন না, তার ভুল হলো কিভাবে? এর উত্তর কি? আপনি বলতে পারেন ভুল তো ভুলই কিন্তু আমি বলব, না, সব ভুলই এভাবে হওয়ার কথা না আমি আপনাকে বলছি, হুজুর যদি এই তেলয়াত আরবিতে না করে, বাংলায় করতেন তাহলে কি ভুল হত? নিশ্চিত না, ভুল হত না কারন হুজুর যখন দেখত যে, তিনি বলছেনঃশয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করনিশ্চিত তখন তিনি আতকে উঠতেন, ধাৎ, আমি কি বলছি? আল্লাহ কিভাবে মানুষকে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে বলে হ্যাঁ, ভুল হত,কিন্তু কখন? হুজুর যদি মদ্য পান করে মাতাল হতেন তখন  
তাহলে সালাতে কি বাংলায় তেলয়াত করতে বলছেন?
কেন? তা কেন বলব, কিন্তু হুজুর যদি আরবি তেলয়াতের সাথে সাথে এর বাংলা অর্থ কি হচ্ছে, তা জানত বা বুঝত্‌, তাহলে কি এই ধরনের ভুল হুজুরের দ্বারা সংঘটিত হত!
তাঁর মানে কি আল্লাহ তায়ালা এই আয়াতের দ্বারা আমাদের বলছেনঃ হে ঈমান দ্বার গন(তোমরা যে ভাষা ভাষীই হও না কেন, এরাবিয়ান,ইন্ডিয়ান,আফগানী,পাকিস্থানী,বাংগালী,চাইনিস,ইংরেজ---------) তোমরা যা বলছ তা না বুঝে সালাত আদায় কর না আমি কোন তাফসীর কারক না, ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান নেই বললেই চলে, শুধু তাই নয় হাদীছে বর্ণিত হয়েছে যে, “রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেছেনঃযে ব্যক্তি নিজের রায় অনু্যায়ী আল্লাহর কিতাবের তাফসীর করে,আর সে যদি তার বর্ণনায় সঠিকও হয়,তবু সে ভুল করলো”(আবু দাউদ-৩৬১০ ইঃফাঃ) তাই আমার চিন্তায় কি বলল তা বড় কথা নয়, তবে কুরআনকে বুঝে পড়ার জন্য অনেক আয়াতেই বলা হয়েছে আল্লাহ আমার লিখায় ভুল হলে তুমি আমায় ক্ষমা করিও- আমীন  

No comments:

Post a Comment