Friday 27 March 2015

আপনি কি সুদের সাথে সম্পৃক্ত আছেন ? আপনি মুসলীম হলে আজ এবং এখনই উহা পরিত্যাগ করুন আর আল্লাহর নিকট তাওবা করুন ।



আল্লাহতায়ালা বলেন, “হে ইমানদ্বার গন,তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যান অর্জ়ন করতে পার এবং তোমরা সে আগুন থেকে বেচে থাক, যা কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে (আল-ইমরান-১৩০-১৩১)”
যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যে ভাবে দন্ডায়মান হয় ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে পাগল করে দেয় ---------- আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই জাহান্নামে যাবে সেখানে তারা চিরকাল থাকবে ( বাকারা- ২৭৫)”
হে ইমানদ্বার গন, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর,যদি ইমানদ্বার হয়ে থাক অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ তাঁর রাসুলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও -------(বাকারা-২৭৮-২৭৯)
উপরোক্ত আয়াত থেকে আমরা সুদের পাপের ভয়াবহতা অনুধাবন করতে পারি, যেমন বলা হয়েছে- আল্লাহ তাঁর রাসুলের সাথে যুদ্ধ করা এবং জাহান্নামে চিরকাল অবস্থান করা (আল্লাহ আমাদের এই আযাব থেকে রক্ষা করুন- আমীন)
যদি আমি জিজ্ঞাসা করি-  মানুষ কখন সুদের লেনদেন করে ? কেউ হয়তো বলবে-মানুষ যখন বিপদে পরে তখন নিরুপায় হয়ে এই পথ অবলম্বন করে
মানুষের বড় বিপদ কোনটি?- তার জীবন বাচান
তার জীবন বাচানোর প্রথম মৌলিক চাহিদা কি ?-খাদ্য
তাহলে এই দুমুঠো ভাতের(খাদ্যের)জন্যই কি মানুষ সুদের পাপে লিপ্ত হয় আমি বলব না, দুমুঠো খাদ্যের জন্য কখনও মানুষ এহেন পাপে নিজেকে জড়াবে না, যদি তার পাপ সম্পর্কে জ্ঞান থাকে আপনি বলতে পারেন-, অনেকেই আছে যারা দুমুঠো খাদ্যের জন্যই এই পাপে লিপ্ত হয় তাহলে আমি বলব, আপনার মত আমার মত নামধারী মুসলীমই এর জন্য দায়ী কারন আমরা প্রতিবেশীর অধিকার আদায়ে ব্যর্থ হয়েছি, এর জন্য আল্লাহ আমাদের অবশ্যই জিজ্ঞাসা করবেন
প্রকৃত পক্ষে রকম ব্যক্তি খুবই কম যারা জীবন ধারনের নিমিত্তে সুদের পাপে লিপ্ত হয় তাহলে কারা এই ভয়াবহ পাপে ডুবে রয়েছে ?
সমাজের প্রায় সকল শ্রেনীর লোকেই এই পাপ করছে, এমন ভাবে যে সে বুঝতেই চেষ্টা করছে না এতে তার পাপ হচ্ছে সে এই সুদকে খুবই সহজ ভাবে নিয়েছে সকল ব্যক্তি মনে করে আমরা সুদে টাকা নেই নাই, আমরা লোন নিয়েছি-সোনালী ব্যাংক, রুপালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক, গ্রামীন ব্যাংক, ---- এই ব্যাংক-সেই ব্যাংক, এই সমিতি-সেই সমিতি এই ভাবে হাজারো প্রতিষ্ঠন থেকে তারা লোন নিচ্ছে , একটা প্রকল্প শেষ অন্য প্রকল্প হাতে নেয় যেমন সম্ভ্রান্ত নাম সুদ নয় লোন, তেমন সম্ভ্রান্ত মানুষ এরা এরা পাঁচ ওয়াক্ত ছ্বলাতও আদায় করে থাকে, নামায পড়তে পড়তে কপালে দাগ ফেলায়ে দেয়, লম্বা লম্বা দাড়িও রাখে, জুব্বা-টুপি পড়ে ঘোরা ফেরা করে, সমাজে বিচার সালিশ করে বেড়ায়, হ্বাজ্জও পালন করে কিন্তু সুদ বুঝে না, আফসোস এই শ্রেনীর লোকদের জন্য
আবু হুরায়রা(রাঃ)থেকে বর্ণিত রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মানুষের উপড় এমন  এক যুগ অব্যশই আসবে যখন মানুষ পরোয়া করবেনা যে কিভাবে সে মাল অর্জন করল হালাল থেকে না হারাম থেকে (বুখারী-১৯৫৩ ইঃফাঃ)
মানুষ জীবন যাপনের জন্য নয়, বিলাসীতার জন্যই সুদে টাকা নিয়ে থাকে মানুষের চাওয়ার কোন শেষ নেই একের পর এক চাইতেই থাকে তবুও তার চাওয়ার শেষ হয় না
আল্লাহ বলেনঃ প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদের মোহাচ্ছন্ন রাখে, যতক্ষন না,তোমরা কবরস্থানে পৌঁছে যাও (তাকাসুর--)
মানুষ কবরেই পৌঁছে যায় তবুও তার চাওয়ার শেষ হয় না, সেই প্রাচুর্য আমাদের চক্ষুদ্বয়ে পর্দার সৃষ্টি করেছে, আমরা দেখিয়াও দেখিনা, শুনিয়াও শুনি না
আমি নিচে কিছু উদাহরণ দিব, আপনি নিজেকে এবং আপনার প্রতিবেশীকে মিলিয়ে দেখুন এর মধ্যে পড়েন কি না ?
মানুষ সুদে টাকা নেয় যার দশ কিঃমঃ যাতায়েতের জন্য একটি বাইসাইকেল আছে কিন্তু তার যাতায়েতের জন্য একটি মটর সাইকেল হলে ভাল হয় এবং তার কাছে ৫০ হাজার টাকাও আছে, আরও ৫০ হাজার টাকা  হলে একটি মটর সাইকেল  ক্রয় করতে পারবে , এই অতিরিক্ত টাকাটি সে সুদে গ্রহন করে, এটি কি তার বিলাসীতা নয় অথচ এই অতিরিক্ত টাকাটি সে আর কিছু দিন অপেক্ষা করলে নিজেই আয় করতে পারত কিন্তু সে ধৈর্য ধারণ করতে পারে নাই আবার যে ব্যক্তির মটর সাইকেল আছে সে মাইক্রো ক্রয় করতে চায় --------
মানুষ সুদে টাকা নেয় যার কোন শহরে একটি বাড়ী আছে কিন্তু রাজধানীতে একটি বাড়ী থাকলে ভাল হয় এবং তার নিকট রাজধানীতে বাড়ী করার জন্য অর্ধেক টাকা আছে যার রাজধানীতে বাড়ী আছে সে উন্নত দেশে, আর যার উন্নত দেশে আছে সে মঙ্গল গ্রহে--------- 
মানুষ সুদে টাকা নেয় যে একটি ইন্ডাস্ট্রীর মালিক আর একটির মালিক হলে ভাল হয়
মানুষ সুদে টাকা নেয় যার একটি ইট নির্মিত বাড়ী আছে কিন্তু একটি পাথর-টাইলস নির্মিত বাড়ী হলে ভাল হয় ----------ইত্যাদি
এভাবে উদাহরণ দিলে চলতেই থাকবে শেষ হবে না, তাই আপনি কি করছেন নিজেই ভাল জানেন, নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি কি সুদের সাথে সম্পৃক্ত? থাকলে এখনই তওবা করুন
হযরত ইবনে আব্বাস(রাঃ) বলেনঃ কিয়ামতের দিন সুদখোরকে বলা হবে-“তোমরা অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আল্লাহর সাথে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও”-তিনি বলেনঃ যে সময় যিনি ইমাম থাকবেন তাঁর জন্য এটা অব্যশ কর্তব্য যে, যারা সুদ পরিত্যাগ করবে না তাদের তওবা করাবেন যদি তারা তওবা না করে তবে তিনি তাদেরকে হত্যা করবেন (তাফসীরে ইবনে কাছীর-বাকারা-২৭৯ আয়াতের ব্যাখ্যা)”
বিঃদ্রঃ সুদ দানকারী, সুদ গ্রহনকারী, সাক্ষ্য দানকারী এবং লিখক সবাই সমান পাপী -আপনি কি কোনটির সাথে সম্পৃক্ত ?

No comments:

Post a Comment