Thursday 26 March 2015

ফলসিফিকেশন টেষ্ট



ফলসিফিকেশন টেষ্ট - কোন জিনিস পরিশুদ্ধ কি না তা জানার জন্য এই টেষ্ট করা হয় এখন পৃথিবীতে অনেক যন্ত্র আবিস্কার হয়েছে যা দ্বারা মানুষ কোন জিনিষ খাঁটি কি না তা নিরুপন করে থাকে আজ আমি এমন একটি বিষয়ের  ফলসিফিকেশন টেষ্ট সম্পর্কে বলব যা আমাদের সমগ্র মুসলীম উম্মাহর জন্য অতীব প্রয়োজনীয়
মুসলীম উম্মাহ নিয়ে কথা বলার মত জ্ঞান আসলে আমার নাই (লিখায় যদি কোন ভুল হয় আল্লাহ যেন আমাকে ক্ষমা করেন-আমীন) তার পরেও দেখেন তো আমি সত্য বলছি কি না ?
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। একটি দল ছাড়া সবাই জাহান্নামে যাবে। জিজ্ঞেস করা , তারা কারা হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) | তিনি বললেন, ‘যারা আমার আমার ছাহাবীদের আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত(তিরমিযী হা/২৬৪১; মিশকাত হা/১৭১)  
এখন এই একটি দল, যারা জান্নাতি তাঁরা কারা ? এটা কি সমগ্র মুসলীম উম্মাহ নিয়ে একটি  গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নয় ? কিন্তু সমাধানটা কি? কারা এই দলোভুক্ত? এর উত্তরটা একটু জটিল হয়ে গেল না ?
যা হোক, ইসলাম নিয়ে যারা কথা বলে, তারা আজ বহু দলে উপদলে বিভক্ত হয়ে গেছে, তাদের যাদের কাছেই যান তারাই বলবে আমরাই হ্বাক পন্থী দল আমরাই একমাত্র রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  এবং তাঁর  ছাহাবীদের আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত এটা তো সব দলেরই মুখস্ত কথা প্রকৃত পক্ষে হ্বাক পন্থী দল কোনটি ? এই প্রশ্ন কাকে করলে সঠিক উত্তর পাওয়া যাবে ? আল্লাহ এবং তাঁর  রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কেই জিজ্ঞাসা করলে একমাত্র সঠিক উত্তর পাওয়া যাবে, নতুবা অন্য কাউকে জিজ্ঞাসা করলে সে আপনাকে বিভ্রান্তিকর উত্তর দিতে পারে তাহলে আল্লাহ এবং তাঁর  রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে জিজ্ঞাসা করার পদ্ধতি কি ? তাঁদেরকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করলে কি তাঁরা উত্তর দিবেন নিশ্চত না তাহলে কিভাবে উত্তর পাওয়া যাবে এই প্রশ্ন আপনি কুরআনকে করলে যে উত্তর পাবেন তা হলো আল্লাহর উত্তর, আর হাদিছকে করলে যে উত্তর পাবেন তা হলো রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উত্তর
কুরআনের একটি নাম হলো ফুরক্বান যার অর্থ হলো-সত্য মিথ্যার মধ্যে পার্থক্যকারী সুতরাং এখন এই দল গুলি হতে এক একটি করে দলকে কুরআনের কাছে নিয়ে আসুন আর কুরআনের আয়াত গুলি দিয়ে এদেরকে টেষ্ট করুন, যদি কোন একটি দল কুরআনের বিন্দু মাত্র বিপরীত মুখী আচরন করে তবে আপনি তাদেরকে বাতিল হিসাবে গন্য করুন কেননা কুরআনের মানদন্ডে তারা মিথ্যা বা বাতিল বলেই গন্য হয়
একই ভাবে সহীহ হাদীস দিয়ে টেষ্ট করুন যেই দলকে আপনি কোরআন সহীহ হাদীছের সঠিক অনুসারী পাবেন তাঁরাই হ্বাক পন্থী দল তাঁরাই রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  এবং তাঁর  ছাহাবীদের আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত
আপনাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় ২+=? আপনি সহজেই বলবেন ৪, কারন প্রশ্নটি খুব সহজ, কিন্তু যদি বলা হয় ৫৬৪৮২৩৯ গুন ৮৯০৫৮৪৩=? এবার আপনি এতো সহজে বলতে পারবেন না,  সঠিক উত্তর দিতে হলে অব্যশই আপনাকে খাতা কলম অথবা ক্যালকুলেটরের সাহায্য নিতে হবে ।
তেমনি ভাবে আপনাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়ঃ অযুর ফরয কয়টি । আপনি সহজেই এর উত্তর দিতে পারবেন(যদিও বাংলাদেশের মুসলিম এমন যে তাদের বেশীর ভাগই এর উত্তর জানে না-হায় আপসোস) কিন্তু যদি আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়ঃ কোন দলটি মুক্তি প্রাপ্ত? এর উত্তর আপনাকে দিতে হলে অব্যশই পবিত্র কুরআন ও হাদীছের সঠিক জ্ঞান ব্যতিত সম্ভব নয় । তাই কুরআন ও সহীহ হাদীছ পড়ুন-ইনশা আল্লাহ সঠিক দল সম্পর্কিত জ্ঞান আল্লাহ আপনাকে দান করবেন ।
আর যদি সব দলের ভিতরেই আপনি গলদ খুজে পান তবে নিজেকে সকল দল থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলুন-এটাই সঠিক পদ্ধতি ।
হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান(রাঃ)থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, লোকেরা রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে কল্যানের বিষয়াদি জিজ্ঞাসা করত কিন্তু আমি তাঁকে অকল্যাণের বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতাম ভয়ে যে, অকল্যাণ আমাকে পেয়ে না বসে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা তো জাহেলিয়্যাত অকল্যাণের মাঝে ছিলাম এরপর আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে কল্যাণের মাঝে নিয়ে আসলেন কল্যাণের পর আবারও কি অকল্যান আসবে ? তিনি বললেন, হ্যাঁ আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সে  অকল্যাণের পর আবারও কি কোন কল্যান আসবে ? তিনি বললেন, হ্যাঁ তবে এর মধ্যে কিছুটা ধুম্রাচ্ছন্নতা থাকবে আমি প্রশ্ন করলাম এর ধুম্রাচ্ছন্নতাটা কিরুপ ? তিনি বললেন, এক জামাআত আমার তরিকা ছেড়ে অন্য পথ অবলম্বন করবে তাদের থেকে ভাল কাজও দেখবে এবং মন্দ কাজও দেখবে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সে কল্যাণের পর কি আবার অকল্যান আসবে ? তিনি বললেন, হ্যাঁ জাহান্নামের  প্রতি আহবানকারী এক সম্প্রদায় হবে যে ব্যক্তি তাদের আহবানে সাড়া দিবে, তাকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করে ছাড়বে আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাদের কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা আমাদের বর্ণনা করুন তিনি বললেন, তারা আমাদের লোকই এবং  আমাদের ভাষায়ই কথা বলবে আমি বললাম, যদি এরুপ পরিস্থিতি আমাকে পেয়ে বসে, তাহলে কি করতে নির্দেশ দেন ? তিনি বললেন, মুসলিমদের জামাআত ইমামকে আঁকড়ে থাকবে আমি বললাম, যদি তখন মুসলিমদের কোন (সংঘবদ্ধ) জামাআত ইমাম না থাকে? তিনি বললেন, তখন সকল দলমত পরিত্যাগ করে সম্ভব হলে কোন গাছের শিকড় কামড়িয়ে পড়ে থাকবে, যতক্ষণ না সে অবস্থায় তোমার মৃত্যু উপস্থিত হয় (বুখারী-৬৬০৫ ইঃফাঃ)
বিঃদ্রঃ # নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত্ করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল(নিসা-৪৮)(সুরা নিসা ১১৬ নং আয়াতও দ্রঃ)
#কোন আয়াত বা হাদিছের মর্মার্থ বুঝতে ব্যর্থ হলে অব্যশই সাহাবী(রাঃ), তাবেঈ,তাবে-তাবেঈ(রহঃ)দের ব্যাখ্যাকে গ্রহন করুন,মুসলীম উম্মাহর নিকট স্বীকৃত সলফে সালেহীনদের ব্যাখ্যা গ্রহন করুন এবং আপনার নিজস্ব চিন্তা শক্তিকে জিজ্ঞাসা করুন (এটা অবশ্য আমার অভিমত)
তোমার মনকে ফাতওয়া জিজ্ঞাসা কর, যদিও মানুষ অন্য ফাতওয়া প্রদান করে”-(তাফসীর ইবনে কাসীর-১ম-২য়-৩য় একত্রিত খন্ডেরপৃঃ৭৫০,ইঃফাঃ)   
আল্লাহতায়ালা আমাদের সঠিক জ্ঞান অর্জন করার আমল করার তৌফিক দান করুন-আমীন

No comments:

Post a Comment