আমাদের
দেশের অধিকাংশ লোকই জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষিত হয়, কেহ হয় ডাক্তার, কেহ ইঞ্জিনিয়ার, কেহবা ব্যবসাহী, কেহ কর্মকর্তা, কেহ কর্মচারী, কেহ বা হয়ে থাকে রাজনীতিবিদ-----।
সাধারনতঃ এদের মধ্যে যারা সবচেয়ে বেশি মেধাবী হয়ে থাকে, তারা ডাক্তার হয়, তারপর ইঞ্জিনিয়ার, আর যারা চাকুরী পায় না, তারা কেহ প্রবাসী এবং কেহ ব্যবসাহী হয়, আর যারা কিছুই পায় না তারা হয় নেতা, বড় নেতা, রাজনীতিবিদ, স্কুল-কলেজের সবচেয়ে পিছনের বেঞ্চের ছাত্র ।
যা হোক ভাল ছাত্র যে রাজনীতিবিদ হয় না, আমি এমনটি বলছি না, তবে তাদের খুঁজতে, নিশ্চিত দিনের বেলায় টর্চ লাগবে ।
আমাদের দেশের যারা
কর্ণধার, সে যেই হোক না কেন, মন্ত্রী, এম-পি, সচিব থেকে শুরু করে সমস্ত কর্মকর্তা এবং সর্বনিম্ন পদস্থ কর্মচারী পর্যন্ত সবাই ।
আমি
আসলে যা বলতে চাইতেছি তা হচ্ছে, এই সমস্ত লোক আমি যাদের কথা বর্ণনা করলাম তারা কতটুকু ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিত? ইসলাম সম্পর্কে কতটুকু জ্ঞানই বা তাদের আছে?
ইসলাম
সম্পর্কে আমরা সাধারনতঃ তিনটি উপায়ে জ্ঞান অর্জন করে থাকি ।
১। পরিবার এবং প্রতিবেশী থেকে ।
২। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা(স্কুল-কলেজ)থেকে ।
৩। ব্যক্তিগত ইচ্ছায় ।
পরিবার
এবং প্রতিবেশী থেকেঃ আমাদের সমাজের অধিকাংশ পরিবারই ইসলাম সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না বললেই চলে এবং প্রতিবেশীরও একই অবস্থা ।
সুতরাং এই যায়গা থেকে কোন ব্যক্তির উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীন ।
প্রচলিত
শিক্ষা ব্যবস্থা(স্কুল-কলেজ)থেকেঃ প্রকৃত পক্ষেঃ শিক্ষা ব্যবস্থা একজন মানুষকে যেই পদ্ধতিতে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বানায়, ঠিক একই পদ্ধতিতে এই শিক্ষা ব্যবস্থাই তাকে সাথে সাথে একজন ইসলামি সঠিক জ্ঞান সম্পন্ন ধার্মীক ব্যক্তিতে রুপান্তরিত করতে পারে ।
কিন্তু বর্তমান অবস্থায় আমরা এখান থেকে কতটা ইসলাম শিখছি? বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় দশম শ্রেনী পর্যন্ত ধর্ম শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে ।
আমরা ধরে নিব যে, এই দশম শ্রেনী পর্যন্ত ধর্ম শিক্ষাই একজন ব্যক্তির জীবনে তার ধর্ম সম্পর্কে শিক্ষা অর্জনের শেষ সু্যোগ, কারন এর পরে যারা ধর্ম সম্পর্কে শিক্ষা অর্জন করে, তারা হয় ব্যক্তিগত উদ্যেগে অথবা এই বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করে, তা অর্জন করে ।
এখন
একজন ব্যক্তি যে দশম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ল, সে কতটুকু ইসলামের জ্ঞান অর্জন করল ? তার জানা সেই ইসলাম দিয়ে, সে ইসলামের কি বুঝবে? আমি-আপনি না বুঝলেও, একজন ইসলাম জানা ব্যক্তি খুব ভালো ভাবেই বোঝেন, আমরা ইসলামের কি বুঝি? আমরা কূপে অবস্থান কৃত ব্যাঙের মত, একটা কূপই যার পরিধি, তার পৃথিবী সম্পর্কে কি ধারনা থাকবে ? একজন নাবিকের নগন্য পরিমান জ্বালানী নিয়ে বিশাল সমূদ্র পারি দেওয়ার চিন্তা যেমন, আমাদের এই জ্ঞান দিয়ে আল্লাহকে পাবার চিন্তাও তেমন ।একজন
মানুষ, যে সব চেয়ে কম শিক্ষায় আল্লাহকে পেতে চায় তাকেও অন্তত শিরক সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে ।
কারন আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ “নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে । তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন । আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত্ করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল।(নিসা-৪৮)(সুরা নিসা ১১৬ নং আয়াতও দ্রঃ)” এই আয়াত অনুযায়ী এটাই প্রতিয়মান হয় যে, আপনি শিরক সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন না করলে, “দেবতার নামে উৎসর্গকৃত মাংশ” খেয়ে আপনি শিরক করে ফেলতে পারেন ।
আমি
যা বলতে চাচ্ছি, তা আসলে এখানেই, আমার দেশের যারা কর্ণধার হয়, যারা মন্ত্রী হয়, এমপি হয়, সচিব হয়, ডাক্তার হয়, হাকিম হয়, উকিল হয়, জজ হয়, ব্যারিষ্টার হয়, ম্যাজিষ্ট্রেট হয়, আইজি হয়, ডিআইজি হয়, ডিসি হয়, এসপি হয়, বুদ্ধিজ়ীবী হয়------- রাজনীতিবিদ হয় ।
তারা ইসলামের কি জানে? তারাতো দশ ক্লাসের মুসলমান ।
আজ এই সমাজ দশ ক্লাসের মুসলমানের দ্বারা শাসিত, তাই তো “দেবতার নামে উৎসর্গকৃত মাংশ খাওয়া হালাল” ইসলাম শিক্ষা বইয়ে এই ধরনের মস্ত বড় ভূল হয় ।
দশ ক্লাসের মুসলমানেরা ত্রিশ বছর আগে পাশ করে আজ তারা বড় রাজনীতিবিদ তাই তো তারা ‘হ্বাজ নিয়ে কটুক্তি করে’ বলে-“আব্দুল্লাহর পুত্র মোহাম্মাদ” মনে হয় মোহাম্মদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বাপের চেয়েও এর জন্ম আগে হয়েছে, জন্ম সুত্রে বড় হলেও মানুষ শ্রদ্ধার সহিত কথা বলে, আর এই নাস্তিক এই শ্রদ্ধাটুকুও আমাদের প্রিয় নাবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)র প্রতি দেখায় নি, যে মহান আল্লাহ আমাদের রব, তিনিও কখনও নাবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)র প্রতি এমন সম্বোধন করেন নি ।
কত বড় সাহস এই নাস্তিকের? আল্লাহ একে ধ্বংশ করুন-আমীন ।
আবার কোন নেতা বলে- “আমি মুসলমানও না, হিন্দুও না”, আবার কোন নেতা বলে- “মা দেবী গজে চড়ে আসছে তাই ফসল ভাল হয়েছে” এদের যদি ধর্ম শিক্ষার জন্য ভালো ব্যবস্থা করা যেত, তাহলে অন্তত এরা এরকম কথা বলতো না ।
যাদের
সুদের ভয়াবহ পরিনতি সম্পর্কে জানা নাই, তারা সুদকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করবে এটাই স্বাভাবিক ।
যাদের ঘুস সমন্ধে জ্ঞান নেই , তারা এটা হালাল বলবে এটাই স্বাভাবিক ।
যারা আল্লাহসুবহানাহুতায়ালা সম্পর্কে এবং তাঁর ক্ষমতা সম্পর্কে জ্ঞান রাখে না, তারা তাঁর(আল্লাহর) আইন লঙ্ঘন করে, নিজেই আইন প্রনয়ন করবে এটাই স্বাভাবিক ।
এদের অবস্থা আস্তে আস্তে এমন হচ্ছে যে, ফেরাউনের মত নিজেই কখন আল্লাহ দাবি করেন ।
আল্লাহ এদের চক্রান্ত থেকে আমাদের মুক্ত রাখুন-আমীন ।
ব্যক্তিগত
ইচ্ছায়ঃ উপরোক্ত দু’টি স্টেপ পার হয়ে যখন কোন মানুষ তার স্রষ্টাকে নিয়ে চিন্তা করে, তখন সে নিজ উদ্যেগেই বা সহকর্মী/সহপাঠীর দ্বারায় প্রভাবিত হয়ে কুরআন এবং হাদীছ নিয়ে চর্চা শুরু করে এবং আল্লাহর হেদায়েত খুজতে শুরু করে ।
আর
কিছু লোক মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও, এরাও পূনাঙ্গ ইসলামি শিক্ষা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়, আবার কেউ ইসলাম শিক্ষা অর্জন করলেও বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষা হতে তারা একেবারে বিমূখ থাকে ।
আর যারাও দু’ একজন ইসলাম ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয় অথবা যারা শুধু দ্বীনের শিক্ষায় বিশেষ পান্ডিত্য অর্জন করে, তাঁরা কখনও আমাদের নেতা হবার সু্যোগ অর্জন করে না ।
আল্লাহ
তায়ালা আমাদের উত্তম নেতার আনুগত্য করার তৌফিক দান করুন-আমীন ।
No comments:
Post a Comment